
স্টাফ রিপোর্টার:-আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার ও দাউদকান্দি থানার ঘুষখোর এসআই সিদ্দিকের বিচারের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ট্রাস্টের উদ্যোগে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানবন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক স্বাধীন সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বাংলাদেশ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ বলেন, “পুলিশ জনগণের বন্ধু, অপরাধীর শত্রু। অথচ বর্তমানে দেখা যায় পুলিশ অপরাধীদের বন্ধু ও জনগণের শত্রু। তাই যদি তা না হয়, তাহলে কিভাবে দাউদকান্দি থানার গৌরীপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সিদ্দিকের সামনে সাংবাদিক মুন্নি শেখকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া হলো? পুলিশ ওই ভূমিদস্যুকে গ্রেপ্তার করে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ভুক্তভোগী সাংবাদিকের মামলা না নিয়ে উল্টো মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আটককৃত ভূমিদস্যুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এটি কোনো ভালো উদাহরণ নয়। আশা করছি, অতি দ্রুত কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিবেন।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা মোঃ কামাল খান, সাংবাদিক নেতা এইচ এম হাকিম, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মোঃ শামীম মিয়া, সাংবাদিক নেতা মইনুল হাসান, সাংবাদিক এম এ আকাশসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ট্রাস্টের ঢাকা মহানগর প্রতিনিধির সভাপতি মোঃ মাহমুব।
ঘটনার বিবরণ:
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে সাংবাদিক মুন্নি শেখকে প্রকাশ্যে মারধর ও পরে টাকা নিয়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গৌরীপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মুন্নি শেখ অভিযোগ করেন, দাউদকান্দি উপজেলার তার পৈতৃক সম্পত্তি দখল করেছে ভূমিদস্যু পলি বেগম, তার জামাই রব, ইকরাম আলম ও হুমায়ুন গং। নিরুপায় হয়ে তিনি কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে দাউদকান্দি থানা তদন্তের দায়িত্ব দেয় গৌরীপুর পুলিশ ফাঁড়িকে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্তের জন্য সাংবাদিক মুন্নি শেখকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে বলা হয় এসআই সিদ্দিকের মাধ্যমে। কিন্তু তিনি অনেক দেরিতে পৌঁছালে তার সামনে পলি বেগমের জামাই রব, একরাম আলম ও হুমায়ুন গং হামলা চালায়। বেধড়ক মারধরে সাংবাদিক মুন্নি শেখ গুরুতর আহত হন এবং তার মাথা ফেটে যায়।
পরে এসআই সিদ্দিক হামলার মূল আসামি রবকে ‘জামাই আদরে’ ফাঁড়িতে নিয়ে যান। অভিযোগ অনুযায়ী, রাত ১১টার পর পর্যন্ত কোনো মামলা না নিয়ে টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে এসআই সিদ্দিক সাংবাদিককে জানান, “তাকে অন্য মামলায় আনা হয়েছিল, আপনার মামলায় নয়।”
আরও অভিযোগ, রাত ১২টা পর্যন্ত সাংবাদিক মুন্নি শেখকে ফাঁড়িতে পানিতে বসিয়ে রেখে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর এলাকাবাসী ও সাংবাদিক সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এসআই সিদ্দিকের ঘুষবাণিজ্য ও প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে গৌরীপুরে ন্যায়বিচার পাওয়া যাচ্ছে না।” তারা দ্রুত দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।