গত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। টানা হামলা ও রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের বরাতে মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু নিউজ এজেন্সি। তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৮৭ জনের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলা বর্বর ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৫৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একই সময়ে আহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৬৮৮ জনে। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। গাজার এখন ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই নয় বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। শুধু দখলদারদের বোমা হামলা ও গুলিতেই নয়; অনাহারে ও পানির অভাবেও মারা যাচ্ছেন নারী ও শিশুরা। গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা ঠিকঠাক না পৌঁছালে সেখানে ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশুর প্রাণ যেতে পারে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার। আন্তর্জাতিক চাপে সোমবার ত্রাণ পৌঁছানোর ওপর ১১ সপ্তাহ ধরে চলা অবরোধ তুলে নিয়েছে ইসরায়েল। যদিও তা সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে, যা গাজাবাসীর জন্য অপ্রতুল।গাজায় ২৩ লাখের বেশি মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত, খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসাসেবার চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে এবং বলছে— মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে আর দেরি করা যাবে না। এর আগে আন্তর্জাতিক চাপে চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, যার মাধ্যমে দু’পক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময়ও হয়। কিন্তু ওই সমঝোতা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের সমঝোতা ভেঙে দিয়ে ইসরায়েল ফের পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে গাজায়। এরপর থেকে শুধু এই সময়ে ৩ হাজার ৪২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৯ হাজার ৬৪৭ জন।