চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:-চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের নিয়মিত অভিযানে শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সৈয়দপাড়া এলাকার জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতা মো. মঞ্জু গ্রুপের কর্মী মো. হেলালের গাড়ি ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে মামলায় পড়লে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
সেই সময় ট্রাফিক পুলিশ ডকুমেন্টবিহীন ও লাইসেন্সবিহীন সিএনজি ও অন্যান্য যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছিল। হেলালের গাড়ি আটক হলে তিনি প্রকাশ্যে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে পুলিশি কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করতে গেলে হেলাল তাদের প্রতিও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন— “আপনি এখানে কে? অক্সিজেনে সাংবাদিকের কী কাজ?” এ সময় তিনি সাংবাদিককে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। তবে নিজের পরিচয় জানাতে চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
পুলিশের বক্তব্য
ঘটনার বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিনই অভিযান চলছে। ডকুমেন্টবিহীন ও অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আইন সবার জন্য সমান। কেউ দলীয় পরিচয় দিয়ে আইনকে অমান্য করতে চাইলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, “প্রতিদিন আমরা বেপরোয়া সিএনজি, লাইসেন্স ছাড়া চালক আর অবৈধ গাড়ির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হই। পুলিশ ব্যবস্থা নিতে গেলে যদি রাজনৈতিক পরিচয় দেখিয়ে বাধা দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
আরেকজন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, “শনিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটলো, এটা খুবই দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া মানে পুরো সমাজে বিশৃঙ্খলার বার্তা দেওয়া।”
বিশেষজ্ঞের মতামত
আইন ও শৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান মনে করেন, “সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের প্রয়োগে কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব বা দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেলে তা দেশের জন্য ভয়াবহ হবে। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানো গণমাধ্যমের স্বাধীনতায়ও আঘাত হানে। এ ধরনের ঘটনায় কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা আরও কঠিন হয়ে যাবে।”