
চন্দনাইশের কৃষকরা শিম চাষে সাফল্য পেয়ে বেড়েছে শিম চাষী।
চট্টগ্রাম চন্দনাইশ প্রতিনিধি: নয়ন দাশ।
চট্টগ্রাম চন্দনাইশের শিমের স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায়, চন্দনাইশের শিমের চাহিদা রয়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। তাই চন্দনাইশের শিম চাষের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে মৌসুমের পর মৌসুম। উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে বিস্তীর্ণ শিম ক্ষেত ফুলে ও সীমে ছেয়ে গেছে প্রতিটি সীম ক্ষেত। ইতোমধ্যে বিক্রিও শুরু করেছেন প্রায় কৃষকরা।
কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, গত মৌসুমে উপজেলায় শিমের চাষ হয়েছিল প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ শিম চাষ হয় ধোপাছড়ি ইউনিয়ন ও দোহাজারী পৌরসভা এলাকায়। চলতি মৌসুমে ধোপাছড়ি ইউনিয়নে প্রায় ১৮০ হেক্টর, দোহাজারী পৌরসভায় প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। গত এক মাস ধরে ধোপাছড়ি অঞ্চলের শিম যাচ্ছে দোহাজারী পাইকারী বাজার হয়ে চট্টগ্রাম নগরীসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি শিম খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
ইতোমধ্যে শিম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চন্দনাইশের অনেক কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুরো উপজেলার শিম চাষীরা পরিপক্ক শিম ও বীজ বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
শিম চাষে সফল সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দীন বলেছেন, উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সরকারি বেসরকারি চাকুরির জন্য বসে না থেকে বিজ্ঞান সম্মতভাবে চাষাবাদে নেমে পড়লে আজকের যুব সমাজ সফলতার দেখা পাবে নিঃসন্দেহে। একই এলাকার নুরুল আলম চলতি মৌসুমে ২ কানি (৮০ শতক) জমিতে শিম চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ১৫০/২০০ কেজি করে কয়েকবার পরিপক্ক শিম পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছেন। ভালো দাম পাওয়ায় খুব খুশি তিনি।
চিরিংঘাটা ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সাজু দাশ জানান, চলতি মৌসুমে ধোপাছড়ি ইউনিয়নে প্রায় ১৮০ হেক্টরের মতো শিম চাষ হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় ১০ থেকে ২০ হেক্টর বেশি। এবং দোহাজারী পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সৈকত বড়ুয়া জানান, দোহাজারী, জামিজুরী, দিয়াকুল ও চাগাচর ব্লকে চলতি মৌসুমে প্রায় ২০০ হেক্টরের মতো শিম চাষ হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় ১০ থেকে ২০ হেক্টর বেশি। প্রতি মৌসুমে বাড়ছে শিম চাষের পরিধি শিম চাষ করে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা। প্রথম পর্যায়ে শিম ও শিমের বীজ বিক্রি করেন এবং পরবর্তীতে বিক্রির জন্য শিমের বীজ শুকিয়ে সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় মুহুর্তে বিক্রি করতে পারেন।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ আজাদ হোসেন বলেছেন, পাহাড়, নদী ও সমতল পরিবেষ্টিত চন্দনাইশ উপজেলায় সিজনাল সবজির চাষাবাদ হয় প্রচুর। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ বেশি হওয়ায় চন্দনাইশ ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের শষ্য ভান্ডার হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
মুলা, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি মরিচ সহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির পাশাপাশি শিম চাষও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চন্দনাইশে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রণোদনা হিসেবে সরকারিভাবে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রদান করায় সফল হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা।